3
কুরআন শরীফের সূরা জুমু‘আহ্-এর ৯নং আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে কাবীর ও জালালাইন-এ এসেছে যে, নবী পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে জুমু‘আর দিনে সর্বদা আযান মসজিদের দরজাতেই হত।
এ ব্যাপারে আবু দাউদ শরীফের ১ম খন্ডের ১৫৫ পৃষ্ঠায় এসেছে-
عن الساءب بن يزيد قال كان يوذن بين يدي رسول الله صلي الله عليه وسلم اذا جلس علي المنبر يوم الجمعة علي باب المسجد وابي بكر وعمر
অর্থাৎ, হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর দিনে যখন মিম্বরে বসতেন সবসময়ই আযান হত ঠিক তাঁর সামনে মসজিদের দরজায়। এরূপ হযরত আবু বকর ও উমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা)-এর সময়েও।
আর এ বিষয়ে হানাফী মাযহাবের সকল ইমামগণ একমত যে, আযান মসজিদের দরজায় বা বাহিরে দেওয়াই সুন্নাত এবং জুমু‘আসহ সকল নামাজের আযানই মসজিদের ভিতরে দেয়া নিষেধ। যেমন- ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, ১ম খন্ড, ৫৫ পৃঃ, ফাতাওয়ায়ে কাযীখান, ১ম খন্ড, ৭৮ পৃঃ, বাহরূর রায়েক, ১ম খন্ড, ২৫৫ পৃঃ, খুলাছাতুল ফাতাওয়া, ১ম খন্ড, ৪৯ পৃঃ, ফাতহুল কাদীর, ১ম খন্ড, ১৭১ পৃষ্ঠায় রয়েছে-
لايوذن في المسجد
অর্থাৎ, মসজিদের ভিতরে আযান দেয়া নিষেধ।
শরহে বেকায়া, ১ম খন্ড, ২৪৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত ‘بين يديه-এর ব্যাখ্যায় শরহে বেকায়ার পাদটীকা উমদাতুর রে‘য়াআতে বলা হয়েছে-
قوله بين يديه اي مستقبل الامام في المسجد كان او خارجه والمسنون هو الثاني
অর্থাৎ, গ্রন্থকারের বক্তব্য ‘بين يديه’-এর অর্থ হয়তো ইমামের সামনে মসজিদের ভিতরে অথবা মসজিদের বাহিরে। কিন্তু এখানে দ্বিতীয় মতটিই (মসজিদের বাহিরে আযান হওয়া) হল সুন্নাত সম্মত বা গ্রহনযোগ্য।
কাজেই ‘بين يدي’ দ্বারা অন্য কোন ব্যাখ্যার আর অবকাশ থাকে না।
তাহতাভী আলাল মারাকিউল ফালাহ গ্রন্থের ১২৮ পৃষ্ঠায় রয়েছে-
يكره ان يوذن في المسجد
অর্থাৎ, মসজিদের ভিতরে আযান দেয়া মাকরূহে তাহরীমা (হারাম)।
বস্তুতই ভিতরে আযান দেয়ার ফলে একটি স্পষ্ট সুন্নাত বিলুপ্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, ইমামে আহলে সুন্নাত, শাহ আহমাদ রেযা খাঁন ফাযেলে বেরেলভী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তাঁর বিখ্যাত ফিকহ বিশ্বকোষ “ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া”-তে, আহকামে শরীয়ত নামক পুস্তকে এবং এ বিষয়ে স্বতন্ত্র একটি রিসালাও লিখেছেন “আওফাল লুমআত ফি আযানে খুতবাতে ইয়াওমিল জুমু‘আত” নামে। যাতে মসজিদের দরজায় বা বাহিরে আযান দেয়া সুন্নাত এবং ভিতরে আযান দেয়ার নিষধাজ্ঞার ব্যাপারে স্পষ্ট আলোচনা এসেছে।
والله تعالي اعلم

Post a Comment

  1. আলহামদুলিল্লাহ।

    ReplyDelete
  2. মাকরু কিভা‌বে হ‌লো, বিষয়‌টি স্পস্ট নয়

    ReplyDelete
  3. nice web for many many evidence.

    ReplyDelete

 
Top